নিয়মকানুন

অভিভাবকের প্রতি: শিশুর প্রথম বিদ্যালয় গৃহ পরিবেশে তার পূর্ণ নিরাপত্তাবোধ অন্তনিহিত গুণাবলী ও প্রতিভার পরিপূর্ণ বিকাশের সুযোগ থাকা আবশ্যক। বিদ্যালয়ের পরিবেশ এর সহিত আপনার সন্তানের যথাযথ সমন্বয়ের জন্য একজন বিচক্ষণ অভিভাবক হিসেবে আপনার যথেষ্ট দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। • আপনার সন্তানের আত্মোপলব্ধি ও আত্মবিকাশের আপনাকে সহায়ক হিসেবে কাজ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় উপকরণাদি প্রদান করতে হবে। • নির্ধারিত সময়সূচি (শীতকালীন প্রথম শিফট সকাল ৮.০০ মি., দ্বিতীয় শিফট ১১.৩০ মি.। এবং গ্রীষ্মকালীন প্রথম শিফট সকাল ৮.০০ মি., এবং দ্বিতীয় শিফট ১১.৩০ মি.।) অনুযায়ী যথাসময়ে আপনার সন্তানকে নির্ধারিত, সঠিক এবং পরিচ্ছন্ন স্কুল ইউনিফর্মে স্কুলে পাঠাতে হবে। • বিদ্যালয়ের চাহিদা মোতাবেক ভর্তির সাথে সাথে নির্ধারিত ড্রেস তৈরি করে দিতে হবে। • বইপত্র ও অন্যান্য উপকরণাদি (ব্যাগ, টিফিন বক্স, ফুটানো পানির ফ্লাক্স ও রুমাল) ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে দিতে হবে। • আপনি আপনার সন্তানের স্বাস্থ্য বৃদ্ধির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। আপনার সন্তানের পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি যত্নবান হবেন। • আপনার সন্তানের হাত পায়ের নখ কাটা, দাঁত পরিষ্কার করা, নাক-কানের যত্ন ও মাথার চুল খাটো করন ইত্যাদির প্রতি নজর রাখতে হবে। • আপনার সন্তানের লেখাপড়া ও আর্থিক অগ্রগতির ব্যাপারে আপনাকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রেণি শিক্ষকের মাধ্যমে আপনাকে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। • নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আপনাকে আপনার সন্তানের মাসিক বেতন পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার কোন অসুবিধা থাকলে পরীক্ষার পূর্বেই তা কর্তৃপক্ষের নিকট দরখাস্তের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে হবে। অন্যথায় আপনার সন্তানের পরীক্ষা ব্যাহত হতে পারে। নিয়মিত ভাবে মাসিক বেতন পরিশোধ না করলে ছাত্র-ছাত্রীর হাজিরাখাতা হতে আপনার সন্তানের নাম কাটা যাবে এবং পরবর্তীতে পুন ভর্তি ফি প্রদান করতে হবে। কোন রোগ আংশিক বেতন গ্রহণযোগ্য নয়। • নিয়মিত বেতন পরিশোধ করা সত্ত্বেও উপযুক্ত কারণ না দর্শিয়ে বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে আপনার সন্তানের বিদ্যালয় অধ্যায়ন করতে দেওয়া কর্তৃপক্ষের বিবেচ্য বিষয়। • আপনার সন্তানের বিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী কোন অমার্জনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। • দশম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আপনার পুত্র/কন্যা/পোষ্য প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তাকে উক্ত শ্রেণীতে অধ্যায়ন করতে দেওয়া কর্তৃপক্ষের বিবেচ্য বিষয়। এবং শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর আদেশ অনুযায়ী আপনাকে আপনার সন্তান/পোষ্যের জন্য বিদ্যালয় হতে অবশ্যই টি. সি. গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনরূপ দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না। • শারীরিক অসুস্থতার জন্য আপনার সন্তান যেকোনো পরীক্ষায় উপস্থিত হতে সমর্থ না হলে তা ডাক্তারের সার্টিফিকেট সহ দরখাস্তের মাধ্যমে যথাসময়ে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। • কোন বিশেষ প্রয়োজনে বিদ্যালয় আপনার সন্তানের সাথে সাক্ষাত করার প্রয়োজন হলে প্রথমে আপনি অফিসে যোগাযোগ করবেন। আপনার সন্তানকে অফিসে ডাকা হবে। সরাসরি শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ না করা সম্মানিত অভিভাবক হিসাবে আপনার শৃঙ্খলা ও কর্তব্যবোধ এর পরিচায়ক। ============================ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মাধ্যমে নিজেকে সমাজের একজন প্রয়োজনীয় ও কাঙ্খিত সদস্যরূপে গড়ে তোলায় ছাত্রজীবনের প্রধান উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্য সাধনে বাস্তবে ও কল্পনায় ব্যাপকতর পরিমণ্ডলে তাকে বিচরণ করতে হয়। প্রাত: কালেই যেমন দিনের আভাস পাওয়া যায় তেমনি ছাত্রজীবনে পরবর্তীকালে একটি পূর্ণ মানুষের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। একটি আদর্শ ছাত্র জীবন একজন ছাত্রের অন্তনিহিত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে তাকে সমাজের একটি বিশিষ্ট স্থানে উন্নীত হতে পারে। তাই নিজেদের ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনায় একজন ছাত্রের নিম্নলিখিত বিধি সমুহ কঠোরভাবে পালন করা আবশ্যক। • আত্মনুশীলন ও আত্মশাসন: আত্মানুশীলন ও আত্মশাসন একজন ভাল ছাত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। শ্রেণীতে বিষয় সমূহ অনুশীলন ও বিশ্লেষণ দ্বারা আত্মাস্থ করতে হয়। তাছাড়া শ্রেণীর পাঠ কার্যকারী বা স্থায়ী হয় না। একটি কাঙ্খিত বস্তুর উদ্দেশ্য সুনিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা ও স্বকীয়তায় আত্ম। এই উভয়টিই একজন ছাত্র-ছাত্রীর জীবনের দূর্লভ গুণ। • নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ানুবর্তিতা: প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিয়মিত নির্ধারিত সময়সূচী মোতাবেক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে হবে। • বিদ্যালয় পরিত্যাগ: বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিদ্যালয় পরিত্যাগ করার কোন প্রয়োজন হলে প্রধান শিক্ষক বরাবর দরখাস্ত লিখে শ্রেণি শিক্ষকের নিকট পেশ করতে হবে। শ্রেণী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের পক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। শ্রেণী শিক্ষক একদিন একজনের বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে বিদ্যালয় পরিত্যাগের অনুমতি দিবেন না। • ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত উপস্থিতি: ক) প্রতিদিনের অনুমোদিত অনুপস্থিতির জন্য ১০০ টাকা হারে জরিমানা প্রদান করতে হবে। খ) ছাত্র-ছাত্রীদের যথার্থ কারণে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকতে হলে পূর্বেই দরখাস্ত (পিতা-মাতা কর্তৃক অথবা পিতা-মাতার সম্মতিসূচক স্বাক্ষরসহ ছাত্র-ছাত্রী কর্তৃক) প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শ্রেণি শিক্ষক কর্তৃক অনুমোদন করাতে হবে। গ) কোন বিশেষ কারণে (অসুস্থতা) অনুমোদিত অনুপস্থিত থাকলে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে উপরোল্লিখিত “খ” এর নিয়মে দরখাস্ত প্রদান করতে হবে। • প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিম্নোক্ত আচরণবিধি অবশ্যই পালন করতে হবে: ক) সহপাঠীদের সহিত হৃদতাপূর্ণ ব্যবহার করতে হবে। উপরের শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। নিচের শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ ও স্নেহ প্রদর্শন করতে হবে। খ) সকল শিক্ষকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তাদের আদেশ, নিষেধ, উপদেশ পালন করতে হবে। গ) বিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক না থাকলে শ্রেণিকক্ষে গোলমাল, বারান্দায় দৌড়া-দৌড়ি, হৈ চৈ অথবা কারো প্রতি কোন প্রকার অশোভন আচরণ করা চলবে না। ঘ) বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ, দেওয়াল, দরজা-জানালা ইত্যাদি কলি বা পেন্সিল দ্বারা নষ্ট করা বা ভাঙচুর করা অথবা শিক্ষার উপকরণাদি এবং তৈজসপত্রাদি নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ঙ) প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার স্ব স্ব সামগ্রী (যেমন বই-খাতা, পেন্সিল-রাবার, স্কেল প্রভৃতি) রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যত্নের সাথে পালন করবে। এসব জিনিসপত্র রাখার জন্য ব্যাগ ব্যবহার করবে। চ) ছাত্র-ছাত্রীগণ বিদ্যালয়ে কোন অপ্রোজনীয় মূল্যবান জিনিসপত্র, ক্যামেরা ও মোবাইল/ সেলফোন সাথে আনতে পারবে না। ছ) প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে নির্ধারিত পোশাক পড়ে পরিচ্ছন্ন অবস্থায় বিদ্যালয়ে আসতে হবে।